অনলাইনে আয় ও চাকুরীর নামে নতুন ফোন কল স্ক্যাম -পার্ট টাইম আয়ের নামে অনলাইন প্রতারক

অনলাইনে আয় ও চাকুরীর নামে নতুন ফোন কল স্ক্যাম

‘আপনি ঘরে বসেই মাত্র দুই থেকে তিন ঘন্টা কাজ করে মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করতে চান?’

বর্তমানে অনলাইনে বিভিন্ন প্লাটফর্ম বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপের সাথে যুক্ত থাকা নারী ও বেকার যুবকদের ফাঁদে ফেলতে এমনই লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হয়।

অনলাইনে আয় ও চাকুরীর নামে নতুন ফোন কল স্ক্যাম - পার্ট টাইম আয়ের নামে অনলাইন প্রতারক

{getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

এসব কিছুই লক্ষ্য করলে দেখা যায় লোভনীয় চাকরির প্রস্তাবে প্রায়শই নারী ও বেকার যুবকরা আগ্রহী হন, যারা ঘরে বসেই আয় করা সম্ভব কাজ খুঁজছেন। কিন্তু এমন ফাঁদে পা দেওয়ার আগে তারা জানতেও পারেন না যে একটি বড় সংখ্যক মানুষের কাছ থেকে বিশাল অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার এটি একটি কৌশল।

চলুন আপনাদের একটি গল্প বলি, আরোহী প্রিয়া তিনি ঢাকার একজন আন্ডার গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী। এমনই একটি স্ক্যামের অফারের ফাঁদে তিনিও পড়েন। আন্ডার গ্রাজুয়েট এই শিক্ষার্থীকে ‘আব্দুল কাদির ' নামের একজন ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপে কল করে একটি কোম্পানির মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে দাবী করে এবং তাকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে চাকরির অফার প্রদান করে। 

আরোহী প্রিয়া ও এ ব্যাপারে আগ্রহী হন। ওই আইডি থেকে রিপ্লাই আসে এড ফির ব্যাপারে। সেখানে তাকে বলা হয় যে কাজ নিশ্চিত করতে হলে তাকে একটি মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে ৬০ টাকা ‘ফি’ পাঠাতে হবে। পরবর্তীতে এই ‘ফি’ প্রদান করলে তাকে প্রশিক্ষণের জন্য একটি ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত করা হবে।

Read more: বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে mcq প্রশ্ন জেনে নিন [PDF]

পার্ট টাইম আয়ের নামে অনলাইন প্রতারক

আরোহী প্রিয়ার প্রতিদিনের কাজ হবে প্যারাগ্রাফ লেখা এবং সেগুলো জমা দেওয়া। এর জন্য তিনি প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হবে । প্যারাগ্রাফের বিষয় যে কোনও কিছু হতে পারে- হতে পারে শীতের সকাল বা বাজার, যে কোনও কিছু।

এই কাজ শুনতে সহজ এবং সাধারণই মনে হয়। কিন্তু বিপরীত অনুভূতি আসে যখন তারা ভিন্ন একটি অফার দেয়।

তাদের অফারটি ছিল যদি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে নিজের মতো আরও চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দিতে পারেন তবে কমিশন হিসেবে অর্ধেক ‘ফি’ পাবেন। ২০ জন বা তার বেশি চাকরিপ্রার্থীদের যুক্ত করতে পারলে বোনাস হিসেবে দেওয়া হবে ২০০ টাকা।

আরোহী প্রিয়া প্রতিদিনের প্যারাগ্রাফ জমা দেওয়া শুরু করলেও, কয়েক দিন পর বুঝতে পারছিলো যে গ্রুপ অ্যাডমিন তার লেখার প্রতি আগ্রহী ছিলেন না। তার সন্দেহ হয় সেখানে যে প্যারাগ্রাফগুলো জমা দেওয়া হচ্ছিল তা তারা দেখেছে।’ তিনি বুঝতে পারেন লেখার চেয়ে গ্রুপ এডমিন সবাইকে চাপ দেন সদস্য যুক্ত করতে ।

শিগগির তিনি বুঝতে পারেন কোনো সমস্যা আছে এখানে। কয়েকদিনের মধ্যেই দেখলেন ২০০ জনের বেশি নারীকে এখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি ভেবে পাচ্ছিলেন না এত মানুষকে কিভাবে তারা ৩০ হাজার টাকা করে বেতন দেবে। সবাইকে এই অনুযায়ী বেতন দিতে গেলে মাসে দিতে হবে ৬০ লাখ টাকা।’

আরোহী প্রিয়ার মনের প্রশ্ন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই উত্তর খুঁজে পায়। গ্রুপে যারাই ২৫ দিনের বেশি সময় ধরে আছে এবং বেতনের বিষয় জানতে চায় তাদেরকেই গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হয়। যাদের বের করে দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে প্রিয়াও ছিল ।

তিনি বুঝতে পারেন যে তারা তাকে সব জায়গা থেকে ব্লক করে দিয়েছে কিংবা তারা তাদের অ্যাকাউন্ট ডি অ্যাকটিভেট করে দিয়েছে। যে নম্বরে ‘ফি’ এর টাকা পাঠিয়েছিলেন সেখানে কল দিয়ে দেখতে পান তার নম্বরটি ব্লক করে রাখা হয়েছে।

Read more: অধ্যবসায় রচনা

অনলাইনে আয় ও চাকুরীর নামে নতুন ফোন কল স্ক্যাম

আরোহী প্রিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই গ্রুপ এডমিনরা এবং তাদের সঙ্গে থাকা মানুষগুলো কয়েক সপ্তাহে হাতিয়ে নিয়েছে অন্তত কয়েক লাখ টাকা।

যদি এমন ৪০টি গ্রুপ গড়ে ২০০ জন সদস্য নিজ নিজ গ্রুপ এডমিনের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে অর্ধেক ‘ফি’ পাঠিয়ে থাকে তাহলে গ্রুপ এডমিনরা তরুণ চাকরি প্রার্থীদের ফাঁদে ফেলে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ১২ লাখ টাকা।

আর এই স্ক্যামের ধরন দিন দিন পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হচ্ছে। আর এই স্ক্যামাররা সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন কৌশলে মানুষ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

অনলাইনে পার্টটাইম জবের আড়ালে প্রতারণার আদ্যপ্রান্ত-

ধরুন, আপনি ভূক্তভোগী আরোহী প্রিয়া, আপনার হোয়াটসঅ্যাপে পার্ট টাইম জব করে দৈনিক আট হাজার থেকে বিশ হাজার টাকা ইনকাম করার একটি ম্যাসেজ আসে। আপনি বর্তমানে বেকার হওয়ার কারণে ম্যাসেজটি সত্য মনে করে লিংকে প্রবেশ করে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করলেন। 

আপনি লিংকে দেওয়া সাইটে প্রবেশ করলেন এবং নাম- ঠিকানাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করলেন। পরবর্তী সময়ে ভূক্তভোগীকে একটি টেলিগ্রাম এর লিংক দেওয়া হয় এবং তিনি উক্ত সাইটের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতারকের সঙ্গে পার্টটাইম জব করার বিষয়ে চ্যাটিং করলেন। প্রতারক ভিকটিমকে বলে তাদের ওয়েবসাইটে থাকা বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করে পুনরায় একই সাইটে অধিক মূল্যে বিক্রয় করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। 

যেহেতু একই সাইটে ক্রয়-বিক্রয় এবং ক্রয়কৃত দামের চেয়ে অধিক দামে বিক্রয় করতে পারবেন যার কারনে নিশ্চিত লাভের আশায় আপনি উক্ত সাইটে বিভিন্ন সময়ে অনেক টাকা প্রদান করলেন। পরবর্তী সময়ে আপনাকে আরো বেশি মূল্যের একটি জিনিস কেনার জন্য প্ররোচিত করবে। এভাবেই আপনি তাদের প্রতারনার স্বীকার হবেন।

প্রতীক নামক এক ভুক্তোভোগী বলেন প্রতারক চক্র তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপে প্রতারকরা মেসেজ দিয়ে অনলাইনে কাজের অফার দিত। ভুক্তোভোগী কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলে আপনি শুধু তাদের দেওয়া লিংকে প্রবেশ করে ভোট দেওয়াসহ রিভিউ করবেন এবং বলে আপনি প্রতিটি কাজের বিনিময়ে ১৫০ টাকা করে পাবেন। 

প্রতারক চক্র ভুক্তোভোগীকে তাদের বিকাশ নাম্বারে ১৫০ টাকা পাঠাতে বলত। আবার ভুক্তোভোগী তাদের নির্দেশ অনুয়ায়ী কাজগুলো করলে প্রতারকরা বিশ্বাস অর্জনের জন্য বিভিন্ন সময় বিকাশ বা নগদ নাম্বারে ৭ হাজার ৮৯৫ টাকা দেয়। এক পর্যায়ে প্রতারক চক্র ভুক্তোভোগীকে তারা কাজের কথা বলে বিকাশে ২৯ হাজার টাকা পাঠাতে বললে ভুক্তোভোগী ৯ হাজার টাকা পাঠায়। প্রতারকরা এক পর্যায়ে ভুক্তোভোগীকে তখন সি-ফাইনান্সিং নামক ওয়েবসাইটে ঢুকে একটি একাউন্ট খুলতে বলে। 

কিন্তু কাজ শেষ হয়নি বলে ভুক্তোভোগীর একাউন্টের টাকা তারা আটকে দেয়। তারা কাজ শেষ করার জন্য আরো ৩৬ হাজার টাকা বিনিয়োগের জন্য পাঠাতে বলে। ভুক্তোভোগী তা দিতে অস্বীকার করলে গ্রুপের অন্যান্য প্রতারকরা ভুক্তোভোগীকে টাকা বিনিয়োগের জন্য বলে। তখন ভুক্তোভোগী প্রায় ৯ লাখ ৯ হাজার টাকা প্রতারকদের বিভিন্ন একাউন্টে পাঠিয়ে এক পর্যায়ে বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন।

Read more : নবম ও দশম শ্রেণি : রসায়ন একাদশ অধ্যায় : খনিজ সম্পদ জীবাশ্ম সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

পুরাতন স্ক্যামের নতুন রূপ-

ফোন কল স্ক্যাম

ফোন কল স্ক্যামে আপনাকে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার অথবা ফোনে কল দিয়ে বিভিন্ন চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে যুক্ত করে নিবে এবং আপনাকে কিছু সহজ টাস্কের বিনিময়েও অল্প কিছু টাকা প্রদান করবে। যখন আপনি তাদের পুরোপুরি বিশ্বাস করে ফেলবেন তখন আপনাকে তারা তাদের বিভিন্ন প্যাকেজের মেম্বারশিপ কিনতে বলবে।

যেমন, ১০০০ টাকার প্যাকেজ কিনলে পাবেন ১০০০০ টাকা, ২৫০০ টাকার প্যাকেজ কিনলে পাবেন ৩০০০০ টাকা আর ৫০০০ টাকার প্যাকেজ কিনলে পাবেন ৭০০০০ টাকা।

আর যখনই আপনি লোভে পড়ে তাদের এই প্যাকেজগুলো কিনবেন তারা আপনাকে সব জায়গা থেকে ব্লক করে দিবে এবং আপনার টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাবে।

অ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার স্ক্যাম

বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে স্ক্যামারদের স্ক্যামের অন্যতম ধরন হচ্ছে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার স্ক্যাম। এই স্ক্যামে তারা মোবাইল নাম্বারে চাকরির অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে এসএমএস পাঠাবে ‘congratulation you selected to the interview. We will give 2000 taka per day. Please contact us this number-xxxxxxx’। 

আপনি যখন তাদের নাম্বারে যোগাযোগ করবে তারা আপনাকে কিছু টাকা জমা দিয়ে অনলাইন ইন্টারভিউতে যোগ দিতে বলবে। আর আপনি যখন তাদের কাছে টাকা জমা দিবেন তাৎক্ষণিক তারা আপনাকে ব্লক করে দিব।

ফিশিং লিঙ্ক স্ক্যাম

রিসেন্টলি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল থেকে বলা হয়েছে-বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে স্ক্যামারদের স্ক্যামের অন্যতম ফিশিং লিঙ্ক স্ক্যাম। ফিশিং লিংকের মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপে, মেসেঞ্জারে অথবা মোবাইল নাম্বার এসএমএস করা হবে- ‘ Congratulations, You won 50000 taka in the lottery. Please Contact this link to get lottery money’। 

 আপনার ফোনের সিমে আসা মেসেজটি অনেকটা এরকম থাকে। অনেকে না বুঝে অথবা লোভে পড়ে এই লিংকে ক্লিক করে থাকেন। ক্লিক করার পরে অনেক সময় এটি টেলিগ্রাম গ্রুপে নিয়ে যায়, আবার দেখা যায়। অনেক সময় কোনো ইনফরমেশন দেয়না অথবা কোনো সাইটে নিয়ে যায়। এগুলো হলো ফিশিং লিংক। এর মাধ্যমে আপনার মোবাইল অথবা ল্যাপটপে সমস্ত তথ্য তাদের কাছে চলে যায়।

ফলস সেলারি স্ক্যাম

বর্তমানে প্রতারকর চক্র বিভিন্ন ভুয়া আইডি থেকে পোস্ট করে, ‘আজ ৬০০০ টাকা ইনকাম হলো’। তাদের পোস্টের সঙ্গে একটি ভুয়া স্ক্রিনশটও থাকতে পারে। 

আর এক দিনে এত টাকা কিভাবে সে আয় করল, এই কৌতূহল থেকে অনেকেই তার সঙ্গে ইনবক্সে যোগাযোগ করে। তখনই প্রতারকদের আসল টোপ দেওয়া শুরু হয় এবং প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায়

রেপিড ইনবক্স স্ক্যাম

হঠাৎ আপনার ইনবক্সে মেসেজ আসলো । সেখানে আপনাকে বলা হয়েছে, ‘প্রতিদিন আয় করা যাবে ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা।’ কিন্তু কাজটা কী? জানতে হলে রিপ্লাই দিতে হবে! 

রিপ্লাই দিতে গেলেই ভুক্তভোগীর বয়স ও অবস্থা বুঝে ফাঁদ পাতে প্রতারকরা। তারা শুধুমাত্র বেকারদেরই না, চাকরিজীবীদেরও লোভনীয় ফাঁদে ফেলে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ।

কোনরকম যোগ্যতা ছাড়াই চাকরি

আপনি প্রতারকদের ফাঁদ সহজেই আন্দাজ করতে পারবেন তাদের লোভনীয় অফার দেখেই। তারা আপনাকে কম যোগ্যতায় বেশি বেতনের লোভ দেখাবে। আর বলবে তাদের সাথে যোগাযোগ করলেই ’নিশ্চিত চাকরি’! কিন্তু তারা এর জন্য বিভিন্ন অজুহাতে টাকা দাবি করে এসব প্রতারকরা।

উদাহরণ স্বরূপ কিছুদিন আগে আমার কাছে আশা একটি এসএমএস এর তথ্য দেওয়া হল। যেটি পার্ট টাইম জবের নামে আমার কাছে এসেছিল।

পার্ট টাইম আয়ের নামে অনলাইনে প্রতারক

বর্তমানে কম যোগ্যতা প্রার্থীদের সাধারণত ভালো বেতনে চাকরি পাওয়া কঠিন। যাদের যোগ্যতা কম, বেকার কিংবা কম বেতনে চাকরি করছেন, তাদের অনেকেই এমন ফাঁদে পা দেন।

ইনকাম ইন ট্রেনিং

সম্প্রতি আমাদের দেশে এমন কিছু প্রতারণার তথ্য উঠে এসেছে, যা শুরুতেই আন্দাজ করা কঠিন। কারণ প্রশিক্ষণ নিলেই নিশ্চিতভাবে আয় করা যাবে, দাবি করে প্রতারকরা। 

আর এই লোভে অনেকেই তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ফি জমা দেন। ভুক্তভোগীরা যখন বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

ছদ্মনামে এমএলএম স্ক্যাম

বর্তমানে প্রতারকরা বিভিন্ন ছদ্মনামে নামে অনলাইনে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ধাঁচে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে এখনো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে প্রায়ই তাদের প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। যদিও তারা এখানে এমএলএমের কথা উল্লেখ করে না, কিন্তু তারা এই পদ্ধতিতেই প্রতারণা করে। 

প্রতারকরা প্রথমে কিছু লোক নিয়োগ দিয়ে কমিশনের লোভ দেখিয়ে তাদের মাধ্যমে আরো লোক নিয়োগের টোপ ফেলে। এভাবে অনেকে নিজেরাও প্রতারিত হয় আর অন্যদেরও জেনে-না জেনে এই পথে নিয়ে আসে। 

আর এর ফলে প্রতারক চক্র অনেক টাকা হাতিয়ে নটুডেন্ট, হাউস ওয়াইফ, ফ্রিশার সবাই পারবে। পার্ট টাইম/ফুল টাইম।

ব্যাঙ্ক অথবা KYC স্ক্যাম

সর্বপ্রথম এই স্ক্যামে আপনার কাছে একটি কল আসবে। কোনও একটি কাস্টোমার কেয়ার থেকে কল করা হচ্ছে বলে দাবি করবে প্রতারকরা। বিকাশ অথবা নগদের মতো অ্যাপের KYC-র জন্য কল করা হয়েছে বলেও জানাতে পারে স্ক্যামাররা। 

এই সময় আপনাকে একটি SMS-এর মাধ্যমে লিঙ্কও পাঠানো হবে এবং বলা হবে KYC আপডেট না করলে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। তারা এই গোটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনার ফোনে AnyDesk অথবা TeamViewer অ্যাপ ইনস্টল করা হবে। 
এই অ্যাপ ব্যবহার করে আপনার ফোনের বা ল্যাপটপের স্ক্রিনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলবে প্রতারকরা এবং আপনি পাসওয়ার্ড টাইপ করলে তা-ও দেখে ফেলবে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা গায়েব হয়ে যাবে


Read more: নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ১০ম অধ্যায় (সমন্বয়)

ফোন কলের স্ক্যামিং-

১. ব্যাংক থেকে কল :

আপনার ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড বা অ্যাকাউন্টের মেয়াদ শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে বলে অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে ব্যাংকের ম্যানেজার বা গ্রাহক প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে কথা বলতে পারে জালিয়াতরা। 

এরপর কার্ডের বিবরণ, অ্যাকাউন্টের বিবরণ বলে দেওয়ার জন্য হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে।

২. বিকাশ বা নগদ থেকে কল:

প্রতারক চক্র বিকাশ এবং নগদ এর কাস্টমার কেয়ার থেকে কল করে বলে জানিয়ে বিকাশ বা নগদ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় এবং ফোনে মেসেজের মাধ্যমে একটি কোড পাঠায়। আর গ্রাহকরা আতঙ্ক হয়ে ওই কোড প্রদান করলেই বিকাশ বা নগদ একাউন্ট খালি হয়ে যায়।

৩. মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে ফোন:

অনেক সময় আপনাকে বলতে পারে ‘আমি অমুক সার্ভিস প্রোভাইডারের তরফ থেকে কল করছি’। আপনার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঠিকানা, জন্ম তারিখ ইত্যাদির মতো বিবরণ যাচাই করা হতে পারে। এরপর কোনও ভাল মোবাইল প্ল্যান বা কোনও বিশেষ অফার দেওয়ার নাম করে ব্যাংকের, বিকাশ বা নগদের বিশদ জেনে নিতে পারে।

৪. আয়কর বিভাগ থেকে কল:

আপনাকে আয়কর বিভাগ থেকেও ফোন করা হতে পারে। সাধারণত প্রতারক চক্র এমন ব্যক্তিকেই কল করা যিনি আয়কর প্রদানের উপযুক্তই নন, বিশেষ করে বয়স্ক নাগরিকদের। তারা ভয়ে বা বিস্ময়ে অনেকেই ব্যাংকের তথ্য জানিয়ে ফেলেন। এর ফলে প্রতারক চক্র অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায়

৫. বিভিন্ন কোম্পানির পক্ষ হয়ে কল:

অনেক সময় প্রতারক চক্র বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে কল দেয় এবং বিভিন্ন চাকরির অফার প্রদান করে। বিশাল অংকের বেতনের কথা শুনলেই বেকার যুবকরা প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে যায়।

পরিশেষে

উপরোক্ত পুরো ঘটনাটি ঘটেছে আমার খুব একজন কাছের মানুষের সাথে। যিনি বিগত কয়েক বছর ধরে টেকনোলজি নিয়ে কাজ করছেন। তার মত একজন মানুষের যদি এমন অবস্থা করতে পারে তাহলে একজন সাধারণ মানুষের অবস্থা কি হবে মিতা ভেবে পাচ্ছি না। 

অনলাইন ইনভেস্টমেন্টের রিলেটেড স্ক্যান থেকে আপনি দূরে থাকুন। নতুন অবস্থায় যদি আপনি অনলাইন জগতে কাজ করে থাকেন তাহলে মনে রাখবেন আপনি কাজ করবেন আপনাকে আপনার ক্লাইন্ট পেমেন্ট করবে এর পক্ষে আপনাকে কোন ইনভেস্টমেন্ট করতে হবে না।

New comments are not allowed.*

Previous Post Next Post