এসএসসি | জীবনীশক্তি অধ্যায়-৪ | এসএসসি জীববিজ্ঞান || SSC Biology Chapter-4

জীবনীশক্তি অধ্যায়-৪ এসএসসি জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

এসএসসি  জীবনীশক্তি অধ্যায়-৪  এসএসসি জীববিজ্ঞান  SSC Biology Chapter-4


{getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

অধ্যায় জীবনশক্তি ১ নং প্রশ্ন

P+H₂O→ Q /ক্লোরোফিল→ C6H12O6 + H₂O + O₂।

ক. সালোকসংশ্লেষণ কী?
খ. কে জৈব মুদ্রা বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের প্রক্রিয়াটির আলোক-নির্ভর পর্যায়টি বর্ণনা কর।
ঘ. "উদ্দীপকের Q এর অনুপস্থিতি এবং P এর ঘাটতি উক্ত প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে"- বিশ্লেষণ কর।

অধ্যায় জীবনশক্তি প্রশ্ন সমাধান

ক.যে প্রক্রিয়ায় সবুজ উদ্ভিদ সূর্যালোকের উপস্থিতিতে CO₂ ও H₂O সহযোগে শর্করা জাতীয় খাদ্য প্রস্তুত করে তাই সালোকসংশ্লেষণ।

খ. ATP জীবন পরিচালনার জন্য জীবকোষে তথা জীবদেহে প্রতিনিয়ত হাজারো রকমের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় শক্তি যোগায়। ATP শক্তি জমা রাখে এবং প্রয়োজন অনুসারে অন্য বিক্রিয়ার জন্য উক্ত শক্তি সরবরাহ করে। এজন্য ATP কে জৈবমুদ্রা বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত প্রক্রিয়াটি হলো সালোকসংশ্লেষণ। সালোকসংশ্লেষণ একটি দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া। এটি দুটি পর্যায়ে বিভক্ত; যথা- (১) আলোক নির্ভর পর্যায় এবং (২) আলোক নিরপেক্ষ পর্যায়। আলোর উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষণের আলোক পর্যায়টি সংঘটিত হয়। নিচে পর্যায়টি ব্যাখ্যা করা হলো- সালোকসংশ্লেষণের আলোক নির্ভর পর্যায়ের জন্য আলো অপরিহার্য। এ পর্যায়ে সূর্যালোককে কাজে লাগিয়ে ক্লোরোফিলের সহায়তায় ATP তৈরি হয়। এ পর্যায়ে সৌরশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এ প্রক্রিয়া ATP ও NADPH + H* উৎপন্ন হয়। এ রূপান্তরিত শক্তি ATP এর মধ্যে সঞ্চিত হয়। ATP ও NADPH*+ H' সৃষ্টিতে ক্লোরোফিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্লোরোফিল অণু আলোক রশ্মির ফোটন শোষণ করে এবং শোষণকৃত ফোটন হতে শক্তি সঞ্চয় করে ADP এর সাথে অজৈব ফসফেট মিলিত হয়ে ATP তৈরি করে।

আলো
ADP + iP ক্লোরোফিল ATP

(সারকথা: উল্লেখিত (i) নং প্রক্রিয়াটি হলো সালোকসংশ্লেষণ। সালোকসংশ্লেষণের আলোক নির্ভর পর্যায়ের জন্য আলো অপরিহার্য। । এ পর্যায়ে সূর্যালোককে কাজে লাগিয়ে ক্লোরোফিলের সহায়তায় ATP তৈরি হয়।)

ঘ.উদ্দীপকের বিক্রিয়াটি হলো সালোকসংশ্লেষণ। যেখানে P দ্বারা CO₂ এবং Q দ্বারা সূর্যালোককে নির্দেশ করা হয়েছে। সূর্যালোকের অনুপস্থিতি এবং CO₂ এর ঘাটতি হলে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে। নিচে জীবজগতের ক্ষেত্রে সালোকসংশ্লেষণে সূর্যালোকের ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হলো-

সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় সূর্যালোক তথা আলোর গুরুত্ব অপরিসীম। পানি ও CO₂ থেকে শর্করা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির উৎস আলো। সূর্যালোক ক্লোরোফিল সৃষ্টিতে অংশগ্রহণ করে। সূর্যালোকের প্রভাবেই পত্ররন্দ্র উন্মুক্ত হয়। CO₂ পাতার অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে এবং খাদ্য প্রস্তুতকরণে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু পাতায় যেটুকু আলো পড়ে তার অতি সামান্য অংশই সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। আবার আলোকবর্ণালির লাল, নীল, কমলা ও বেগুনি ■ অংশটুকুতেই সালোকসংশ্লেষণ ভালো হয়। সবুজ ও হলুদ আলোতে ■ সালোকসংশ্লেষণ ভালো হয় না। একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত আলোর পরিমাণ বাড়লে সালোকসংশ্লেষণের হারও বেড়ে যায়। কিন্তু আলোর পরিমাণ অত্যধিক বেড়ে গেলে পাতার অভ্যন্তরস্থ এনজাইম নষ্ট হয়ে যায়, ক্লোরোফিল উৎপাদন কম হয়। ফলে সালোকসংশ্লেষণের হারও কমে যায়। সাধারণত 400 nm থেকে 480 nm এবং 680 nm তরঙ্গ দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট আলোতে সালোকসংশ্লেষণ সবচেয়ে ভালো হয়।

(সারকথা: উদ্দীপকের বিক্রিয়াটি হলো সালোকসংশ্লেষণ। যেখানে ? দ্বারা কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং Q দ্বারা সূর্যালোককে নির্দেশ করা হয়েছে। পানি ও CO₂ থেকে শর্করা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির উৎস আলো। সূর্যালোক ক্লোরোফিল সৃষ্টিতে অংশগ্রহণ করে।)

Read more: বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে mcq প্রশ্ন জেনে নিন [PDF]


অধ্যায় জীবনশক্তি ২ নং প্রশ্ন

জীবকোষে অবস্থিত একটি অঙ্গাণু দেহ পরিচালনায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। উক্ত অঙ্গায়ুতে সংঘটিত রাসায়নিক বিক্রিয়ায় উৎপন্ন তাপ ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে-জীবের সকল শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন হয়। উক্ত প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবে সংঘটিত না হলে জীবকুল ধ্বংসের সম্মুখীন হতো। 

ক. শ্বসনিক বস্তু কী?

খ. ব্যাকটেরিয়াতে সবাত শ্বসন হয় না কেন?

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অঙ্গাণুটিতে সংঘটিত বিক্রিয়ার ধাপগুলো বর্ণনা কর। ২

ঘ. "উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবে সংঘটিত না হলে জীবকুল ধ্বংসের সম্মুখীন হতো।" উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

অধ্যায় জীবনশক্তি প্রশ্ন সমাধান

ক.শ্বসন প্রক্রিয়ায় যেসব বস্তু (শর্করা, প্রোটিন, চর্বি ও বিভিন্ন জৈব এসিড) জারিত হয়ে CO₂ ও শক্তি উৎপাদন করে সেসব বস্তুই হলো শ্বসনিক বস্তু।

খ.যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় কোন শ্বসনিক বস্তু অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়াই কোষের ভিতরের এনজাইম দিয়ে আংশিকরূপে জারিত হয়ে বিভিন্ন প্রকার জৈব যৌগ, CO₂ এবং সামান্য পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে তাকে অবাত শ্বসন বলে। আমরা জানি, ব্যাকটেরিয়াতে সবাত শ্বসন না হয়ে অবাত শ্বসন ঘটে। কারণ কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া আছে যারা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বাঁচতে পারে না। 

ফলে তাদের কোষের ভিতরে উপস্থিত এনজাইম দিয়ে শ্বসনিক বস্তু আংশিকরূপে জারিত করে বিভিন্ন প্রকার জৈব যৌগ, CO₂ এবং সামান্য পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে।

গ.উদ্দীপকে উল্লিখিত অঙ্গাণুটি হলো মাইটোকন্ড্রিয়া আর প্রক্রিয়াটি হলো সবাত শ্বসন প্রক্রিয়া। মাইটোকন্ড্রিয়াতে সবাত শ্বসনের ক্রেবস চক্র ও ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র এই দুটি ধাপ সংঘটিত হয়। নিচে ধাপ দুটি বর্ণনা করা হলো- ক্রেবস চক্র: এ পর্যায়ে অ্যাসিটাইল Co-A মাইটোকন্ড্রিয়াতে প্রবেশ করে এবং ক্রেবস চক্রে অংশগ্রহণ করে। এ চক্রের সকল বিক্রিয়াই মাইটোকন্ড্রিয়াতে সংঘটিত হয়। এই চক্রে এক অণু অ্যাসিটাইল Co-A থেকে দুই অণু কার্বন ডাইঅক্সাইড, তিন অণু NADH+H', এক অণু FADH, এবং এক অণু GTP উৎপন্ন হয়। (অর্থাৎ দুই অণু অ্যাসিটাইল Co-A থেকে চার অণু CO₂, 6 অণু NADH+H', দুই অণু FADH, এবং দুই অণু GTP উৎপন্ন হয়।)

ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র: গ্লাইকোলাইসিস, অ্যাসিটাইল কো-এ সৃষ্টি এবং কেস চক্রে NADH+H' (বিজারিত NAD), FADH₂ (বিজারিত FAD) উৎপন্ন হয়, এই ধাপে সেগুলো জারিত হয়ে ATP, পানি, উচ্চশক্তির ইলেকট্রন এবং প্রোটন উৎপন্ন হয়। উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ইলেকট্রনগুলো ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় যে শক্তি প্রদান করে সেই শক্তি ATP তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

(সারকথা: মাইটোকন্ড্রিয়ায় সবাত শ্বসনের ক্রেবস চক্র ও ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র এই দুইটা। ধাপ সংঘটিত হয়।)

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি মূলত শ্বসন প্রক্রিয়া। শ্বসন প্রক্রিয়াটি যথাযথ সংঘটিত না হলে জীবকুল ধ্বংসের সম্মুখীন হবে। জীবের অস্তিত্ব রক্ষায় শ্বসন প্রক্রিয়ার ভূমিকা সম্পর্কে নিচে বিশ্লেষণ করা হলো- শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন শক্তি দিয়ে জীবের সব ধরনের ক্রিয়া-বিক্রিয়া ও কাজকর্ম পরিচালিত হয়। শ্বসনে নির্গত CO₂ জীবের প্রধান খাদ্যশর্করা উৎপন্নের জন্য সালোকসংশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। এ প্রক্রিয়া উদ্ভিদের খনিজ লবণ পরিশোষণে সাহায্য করে, যা পরোক্ষভাবে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও অন্যান্য জৈবিক প্রক্রিয়া চালু রাখে। কোষ বিভাজনের প্রয়োজনীয় শক্তি ও কিছু আনুষঙ্গিক পদার্থ শ্বসন প্রক্রিয়া হতে আসে। তাই এ প্রক্রিয়া জীবের দৈহিক বৃদ্ধিও নিয়ন্ত্রণ করে। এ প্রক্রিয়া বিভিন্ন উপক্ষার ও জৈব এসিড সৃষ্টিতে সহায়তার মাধ্যমে জীবের অন্যান্য জৈবিক কাজেও সহায়তা করে। 

কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বাঁচতে পারে না। এদের শক্তি উৎপাদনের একমাত্র উপায় হলো অবাত শ্বসন। এ প্রক্রিয়ায় ইথাইল অ্যালকোহল তৈরি হয় যা বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত হয়। ল্যাকটিক এসিড ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দধি, পনির উৎপাদিত হয়। বুটি তৈরিতে এ প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হয়। ঈস্টের অবাত শ্বসনের ফলে অ্যালকোহল ও CO₂ গ্যাস তৈরি হয়। তাছাড়া উদ্ভিদের শ্বসন প্রক্রিয়ায় O₂ নির্গত হয় যা সমগ্র প্রাণীকুলের বেঁচে থাকার একমাত্র নিয়ামক। অপরদিকে উদ্ভিদ CO₂ গ্রহণ করে ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হয়।

উপর্যুক্ত আলোচনা হতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, শ্বসন প্রক্রিয়াটি জীবের অস্তিত্ব রক্ষায় অপরিহার্য।

(সারকথা: শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন শক্তি দিয়ে জীবের সব ধরনের ক্রিয়া- বিক্রিয়া ও কাজকর্ম পরিচালিত হয়। উদ্ভিদের শ্বসন প্রক্রিয়ায় 02 নির্গত হয় যা সমগ্র প্রাণীকুলের বেঁচে থাকার একমাত্র নিয়ামক।)

Read more : নবম ও দশম শ্রেণি : রসায়ন একাদশ অধ্যায় : খনিজ সম্পদ জীবাশ্ম সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর


অধ্যায় জীবনশক্তি ৩ নং প্রশ্ন

(i) CH12O6+602
→6CO₂+ 6H2O + শক্তি

(ii) C6H12O6
→2C2H5OH + 2CO₂ + শক্তি

ক. ATP কী?

খ. C3 ও C, উদ্ভিদের মধ্যে দুটি পার্থক্য লিখ।

গ. উদ্দীপকের (ii) নং বিক্রিয়াটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. (ii) নং থেকে (i) নং বিক্রিয়ায় অধিক শক্তি উৎপন্ন হয়- যুক্তি দেখাও।

অধ্যায় জীবনশক্তি প্রশ্ন সমাধান

ক. Adenosine Triphosphate কেহ বলা হয় ATP।

খ. C₃ ও C₁ উদ্ভিদের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ- C3 উদ্ভিদ

১. যে সব উদ্ভিদে ক্যালভিন চক্রের সাহায্যে শর্করা তৈরি হয় তাদের C, উদ্ভিদ বলে।
২. প্রথম স্থায়ী পদার্থ হলো ৩-কার্বন বিশিষ্ট ৩- ফসফোগ্লিসারিক এসিড।

C4 উদ্ভিদ

১. যে সব উদ্ভিদে হ্যাচ ও স্ল্যাক চক্র এবং ক্যালভিন চক্র চলে তাদেরকে C4 উদ্ভিদ বলে।
২. প্রথম স্থায়ী পদার্থ হলো ৪-কার্বন বিশিষ্ট অক্সালো এসিটিক এসিড।

গ. উদ্দীপকের উল্লিখিত (ii) নং বিক্রিয়াটি হলো শ্বসন প্রক্রিয়ার। আমরা জানি সবাত শ্বসন প্রক্রিয়া অক্সিজেনের উপস্থিতিতে ঘটে। কিন্তু উক্ত বিক্রিয়ায় অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে সবাত শ্বসন না ঘটে অবাত শ্বসন ঘটবে। অবাত শ্বসন প্রক্রিয়া নিম্নোক্ত দুই ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। যথা-

ধাপ-১: গ্লুকোজের অসম্পূর্ণ জারণ: এই ধাপে এক অণু গ্লুকোজ। থেকে দুই অণু পাইরুভিক এসিড, চার অণু ATP (এর মধ্যে দুই অণু ব্যবহার হয়ে যায়) এবং দুই অণু NADH+H' উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ আপাতদৃষ্টিতে এ পর্যন্ত বিক্রিয়া সবাত শ্বসনের গ্লাইকোলাইসিসের অনুরূপ। তবে উৎপন্ন পাইরুভিক এসিড পরবর্তী ধাপে বিজারিত হয়ে যায় বলে অবাত শ্বসনে গ্লুকোজের অসম্পূর্ণ জারণ ঘটে- এমনটা বিবেচনা করা হয়।

ধাপ-২: পাইরভিক অ্যাসিডের বিজারণ: সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত 1 এনজাইমের কার্যকারিতায় পাইরুভিক অ্যাসিড বিজারিত হয়ে CO₂ এবং ইথাইল অ্যালকোহল অথবা শুধু ল্যাকটিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে।

এক্ষেত্রে গ্লাইকোলাইসিসে উৎপন্ন বিজারিত NAD (অর্থাৎ ? NADH+H') জারিত হয়ে যে ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও শক্তি নির্গত করে, তা ব্যবহৃত হয় পাইরুভিক অ্যাসিড থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিড বা ক্ষেত্রবিশেষ ইথানল উৎপাদনের জন্য। অন্যদিকে, অক্সিজেনের অভাবে তখন অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশনও চলে না। তাই অবাত শ্বসনের ক্ষেত্রে এক অণু গ্লুকোজের গ্লাইকোলাইসিসে নিট মাত্র 2 অণু ATP পাওয়া যায়।

(সারকথা: অবাত শ্বসন প্রক্রিয়া দুই ধাপে সম্পন্ন হয়, যথা- গ্লুকোজের অসম্পূর্ণ জারণ, পাইরুভিক অ্যাসিডের বিজারণ। অবাত শ্বসনের ক্ষেত্রে এক অণু গ্লুকোজের গ্লাইকোলাইসিসে নিট মাত্র 2 অণু ATP পাওয়া যায়।)

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিক্রিয়া (i) এবং বিক্রিয়া (ii) নং হলো যথাক্রমে সবাত শ্বসন এবং অবাত শ্বসন। অবাত শ্বসন অপেক্ষা সবাত শ্বসনে অধিক শক্তি উৎপন্ন হয় তা যুক্তিসহকারে নিচে বর্ণনা করা হলো-

সবাত শ্বসন প্রক্রিয়াটি চারটি ধাপের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। যথা- গ্লাইকোলাইসিস, অ্যাসিটাইল কো-এ সৃষ্টি, ক্রেবস চক্র ও ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র। আমরা জানি, সবাত শ্বসনে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। আর অক্সিজেন একটি জারক পদার্থ। যার ফলে শ্বসনিক বস্তু (শর্করা, প্রোটিন, লিপিড, বিভিন্ন ধরনের জৈব এসিড) সম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে CO₂, H₂O এবং বিপুল পরিমাণে শক্তি উৎপন্ন করে অর্থাৎ সবাত শ্বসনের সময় উক্ত চারটি ধাপে এক অণু গ্লুকোজ সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে সর্বমোট ৬ অণু CO₂, ৬ অণু পানি এবং ৩৮টি ATP উৎপন্ন করে। অপরদিকে অবাত শ্বসন দুই ধাপে সম্পন্ন হয়। যথা- গ্লুকোজের অসম্পূর্ণ জারণ এবং পাইরুভিক অ্যাসিডের বিজারণ। অবাত শ্বসন অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে ঘটে। আর তাই শ্বসনিক বস্তু অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়াই কোষের ভিতরকার এনজাইম দিয়ে আংশিকরূপে জারিত হয়ে বিভিন্ন প্রকার জৈব যৌগ, CO₂ এবং সামান্য পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে। অর্থাৎ অবাত শ্বসনের সময় এক অণু গ্লুকোজের অসম্পূর্ণ জারণের ফলে মাত্র ২ অণু ATP উৎপন্ন হয়। যা সবাত শ্বসন অপেক্ষা অনেক কম শক্তি উৎপন্ন হয়।

(সারকথা : সবাত শ্বসন প্রক্রিয়াটি চারটি ধাপের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। যথা- গ্লাইকোলাইসিস, অ্যাসিটাইল কো-এ সৃষ্টি, ক্রেবস চক্র ও ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র। সবাত শ্বসনের সময় উক্ত চারটি ধাপে এক অণু গ্লুকোজ সম্পূর্ণভাবে জরিত সর্বমোট ১৬ অণ CO₂, ৬ অণু পানি এবং ৩৮টি ATP উৎপন্ন করে।)

Read more: অধ্যবসায় রচনা


অধ্যায় জীবনশক্তি ৪ নং প্রশ্ন

উদ্ভিদের একটি জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া যাতে পানির সালোক বিভাজন ঘটে এবং CO, বিজারিত হয়ে ১' উৎপন্ন হয়।।

ক. স্বসনিক বস্তু কী?

খ. গ্রাইকোলাইসিস বলতে কী বুঝায়?

গ. উদ্দীপকের ৪' তৈরির প্রক্রিয়া বর্ণনা কর।

ঘ. উল্লিখিত প্রক্রিয়াটিতে "পানির সালোক বিভাজন ও ATP উৎপাদন প্রক্রিয়া যুগপৎ ঘটে'-বিশ্লেষণ কর।


অধ্যায় জীবনশক্তি প্রশ্ন সমাধান

ক.স্বসন প্রক্রিয়ায় যেসব বন্ধু (শর্করা, প্রোটিন, চর্বি ও বিভিন্ন জৈব বিচ) জারিত হয়ে CO, ও শক্তি উৎপাদন করে সেসব বন্ধুই হলো স্বসনিক বন্ধু।

খ.কোথের সাইটোপ্লাজমে স্বসনের যে পর্যায়ে এক অণু গ্লুকোজ বিভিন্ন উৎসেচকের সহায়তায় তিন কার্বনবিশিষ্টন্ট দুই অণু পাইব্রভিক এসিডে পরিণত হয়, তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে। এ প্রক্রিয়ায় চার অনু ATP যার দুই অণু খরচ হয়ে যায় এবং দুই অণু NADH+H উৎপর হয়। এ প্রক্রিয়ার জন্য কোনো অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে না।

গ.উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি হলো সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া এবং 'ম' দ্বারা শর্করা জাতীয় উপাদানকে বুঝানো হয়েছে। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় আত্তীকরণ শক্তি শর্করা তৈরিতে সহায়তা করে। নিচে শর্করা তৈরির প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করা হলো-

সবুজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার শর্করা প্রস্তুত করে। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার আলোক পর্যায়ে ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় ক্লোরোফিল অণু সূর্য থেকে আলোক ফোটন শোষণ করে, পানির উপস্থিতিতে ATP NADPH + H' তৈরি করে। এদেরকে আত্তীকরণ শক্তি বলে। এ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ক্লোরোপ্লাস্টে অন্ধকার পর্যায়ে CO, বিজারিত হয়ে শর্করা খাদ্য তৈরি হয়। এক্ষেত্রে রাহুদ্ধ CO, পত্ররন্দ্রের মধ্য দিয়ে কোষে প্রবেশ করে, কোষে অবস্থিত ৫-কার্বন বিশিষ্টন্ট রাইবুলোজ-১, ৫-ডাইফসফেট এর সাথে মিলিত হয়ে ৬-কার্বন বিশিষ্ট কিটো এসিড তৈরি করে যা সাথে সাথে ভেঙে গিয়ে তিন কার্বনবিশিষ্ট দুই অণু ৩-ফসফোগ্লিসারিক এসিড তৈরি হয়। অতঃপর আলোক পর্যায়ে সৃষ্ট আত্তীকরণ শক্তি ATP ও NADPH + H' কে ব্যবহার করে ৩-ফসফোগ্লিসারিক এসিড, ৩- কার্বন বিশিষ্ট ৩-ফসফোগ্লিসারালডিহাইড, ডাইহাইড্রোক্সি এসিটোন ফসফেট তৈরি করে। 

৩-ফসফোগ্লিসারালডিহাইড ও ডাইহাইড্রক্সি এসিটোন ফসফেট থেকে ক্রমাগত বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একদিকে শর্করা এবং অপরদিকে রাইবুলোজ-১, ৫-ডাইফসফেট তৈরি হয়ে থাকে। এভাবে আত্তীকরণ শক্তি ATP ও NADPH + H' কার্বন ডাইঅক্সাইডের সাথে বিক্রিয়া করে বিজারিত হয়ে শর্করা উৎপন্ন করে।

সারকথা : সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার আলোক পর্যায়ে ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় ক্লোরোফিল অনু সূর্য থেকে আলোক ফোটন শোষণ করে, পানির উপস্থিতিতে ATP NADPH H' তৈরি করে। এদেরকে আত্তীকরণ শক্তি বলে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি হলো সালোকসংশ্লেষণ। সালোসংশ্লেষণ একটি দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া। এটি দুটি পর্যায়ে বিভক্ত। যথা- ১. আলোক নির্ভর পর্যায় এবং ২. আলোক নিরপেক্ষ পর্যায়। আলোর উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষণের আলোক পর্যায়টি সংঘটিত হয়। সালোকসংশ্লেষণের আলোক পর্যায়েই সাধারণত পানির সালোক বিভাজন ও ATP উৎপাদন প্রক্রিয়া এক সঙ্গে ঘটে থাকে নিচে পর্যায়টি বিশ্লেষণ করা হলো-

সালোকসংশ্লেষণের আলোক নির্ভর পর্যায়ের জন্য আলো ও এ পর্যায়ে সুর্যালোককে কাজে লাগিয়ে ক্লোরোফিলেও সহায়তায় তৈরি হয়া। এ পর্যায়ে সৌরশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে বুলাঞ্জি প্রক্রিয়া ATP NADPH H' উৎপন্ন হয়। এ রূপান্তরিত পাচ্ছি ৩০ট এর মধ্যে সঞ্চিত হয়। ATP NADPH 11° দৃষ্টিতে চেয়েছি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্লোরোফিল অণু আলোক রশ্মিত সোনি শোষণ করে এবং শোষণকৃত ফোটন হতে শক্তি সন্বয় করে AIR সাথে অজৈব ফসফেট মিলিত হয়ে ATP তৈরি করে।

ADI' + আলো

→ATP ip ক্লোরোফিল

সূর্যালোক ও কারোফিলের সহায়তায় পানি বিয়োজিত হয়ে অমিয়ন হাইড্রোজেন ও ইলেকট্রন উৎপন্ন হয়। রাষ্ট্র প্রক্রিয়াকে পরি মটোলাইসিস বলা হয়। আবার ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় এে উৎপন্ন হয় এবং ইলেকট্রন NADP কে বিজারিত করে NADPH H' উৎপন্ন করে। ATP এবং NADPH' + H' কে আত্তীকরণ প বলা হয়।

(সারকথা: উল্লেখিত প্রক্রিয়াটি হলো সালোকসংজেষণ। সালোকসংশ্লেধাও সারকথা: আলোক নির্ভর পর্যায়ের জন্য আলো অপরিহার্য। এ পর্যায়ে সুর্যাসোহার কাজে লাগিয়ে ক্লোরোফিলের সহায়তায় ATP তৈরি হয়।)

New comments are not allowed.*

Previous Post Next Post