সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব - সংক্ষিপ্ত আলোচনা - বিষয়বস্তু

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব - সংক্ষিপ্ত আলোচনা - বিষয়বস্তু

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব - সংক্ষিপ্ত আলোচনা - বিষয়বস্তু


{getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের নাট্যকার পরিচিতি

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের নাট্যকার সিকান্দার আবু জাফর। সিকান্দার আবু জাফরের জন্ম ১৯১৮ সালের সাতক্ষীরা জেলার তোলা উপজেলার তেতুলিয়া গ্রাম। ক্যামদার আবু জাফর মৃত্যুবরণ করেন ১৯৭৫ সালে ৫ই আগস্ট ঢাকায়। সিকান্দার আবু জাফরের পিতা সৈয়দ মইনুদ্দিন হাশেম। 

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের নাট্যকার সিকান্দার আবু জাফরের বিখ্যাত রচনা, আমাদের সংগ্রাম চলবেই, বাংলা ছাড়ো। বাংলা নাটকের নাট্যকার সিকান্দার আবু জাফরের বিশেষ অর্জন, বাংলা একাডেমী পুরস্কার ১৯৬৬।

Read more: বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে mcq প্রশ্ন জেনে নিন [PDF] 

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের নাট্যকার সিকান্দার আবু জাফরের বিখ্যাত নাটক মাকড়সা ১৯৬০, শকুন্ত উপাখ্যান ১৯৫২, মহাকবি আলাওল ১৯৬৬। 

বিশেষ তথ্য তার সম্পাদনায় ইহকাল প্রকাশিত মাসিক সাহিত্যিক পত্রিকার সমকাল হয়ে উঠেছিল তরুণ সাহিত্যদের মিলনক্ষেত্র। ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত রেডিও পাকিস্তানের স্টাফ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেন। 

কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত নবযুগ পত্রিকায় কাজ করেছেন তিনি। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন কলকাতা থেকে সাপ্তাহিক অভিযান পত্রিকার সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন।

(ভিডিও টি দেখুন, ভিডিওটি দেখলে অনেক বিষয় আপনাদের পরিস্কার হয়ে যাবে)

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • প্রাচ্য নাট্যশাস্ত্রের নাটক কে দৃশ্য কাব্যগুলো অভিহিত করা হয়েছে।
  • ব্রেক ভাষা থেকে আগত ড্রামা শব্দের অর্থ একশন অর্থাৎ কিছু করে দেখানো।
  • বাংলা নাটক নাট্য, নট, নটি, শব্দের উদ্ভব হয়েছে নট,ধাতু থেকে যার অর্থ নড়াচড়া করা।
  • মঞ্চ নাটকের প্রকৃত ও যথার্থ পরিবেশনা স্থল।
  • নাটকের চারটে বিষয়কে বিবেচনা নেয়া হয় কাহিনী /প্লট, চরিত্র, সংলাপ, পরিপ্রেক্ষিত।
  • এরিস্টটলস্ট বা শেক্সপিয়ারের কালের সময় ঐক্য স্থানের, ঐক্য ঘটনার, ঐক্য নিশ্চিত করা ছিল নাটক রচনার পূর্বশর্ত।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের উল্লেখিত চরিত্রসমূহ হলো

আলীবর্দী খাঁ, মীরজাফর, ক্লাইভ,উমিচাঁদ, ওয়াটস, ওয়াটসন, হলওয়েল, ঘসেটি বেগম, ড্রেক, মানিক চাঁদ, জগতশেঠ, আমিনা বেগম, মিরন, মিরর্মদান , মোহনলাল, রাজবল্লভ, লুৎফুন্নেসা, রায়দুর্লভ,

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রথম অংক

  • প্রথম দৃশ্য : সময় ১৭৫৬ সাল ১৯ শে জুন ; স্থান ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ।
  • দ্বিতীয় দৃশ্য : সময় ১৭৫৬ সাল ৩ জুলাই স্থান কলকাতা নদীতে ফোর্ট উইলিয়াম জাহাজ।
  • তৃতীয় দৃশ্য : সময় ১৭৫৬ সাল স্থান ঘর সিটি বেগমের বাড়ি।

সিরাজদৌলা নাটকের দ্বিতীয় অংক

  • প্রথম দৃশ্য: সময় ১৭৫৭ সালের ১০ মার্চ স্থান নবাবের দরবার।
  • দ্বিতীয় দৃশ্য: সময় ১৭৫৭ সাল ১৯ মে স্থান মীরজাফরের আবাস।
  • তৃতীয় দৃশ্য: সময় ১৭৫৭ সাল ৯ই জুন স্থান মিলনের আবাস।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের তৃতীয় অংক

  • প্রথম দৃশ্য : সময় ১৭৫৭ সাল ১০ জুন থেকে ২১ জুন এর মধ্যে যেকোনো একদিন স্থান লুৎফুন্নিসার কক্ষ।
  • দ্বিতীয় দৃশ্য : সময় ১৭৫৭ সাল ২২ শে জুন স্থান পলাশীতে সিরাজের শিবির।
  • তৃতীয় দৃশ্য: ১৭৫৭ সাল ২৩ এ জুন স্থান পলাশী যুদ্ধ ক্ষেত্র।
  • চতুর্থ দৃশ্য: সময় ১৭৫৭ সাল ২৫ শে জুন স্থান মুর্শিদাবাদ নবাব দরবার।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চতুর্থ অংক

  • প্রথম দৃশ্য: সময় ১৭৫৭ সাল ২৯ শে জুন স্থান মীরজাফরের দরবার।
  • দ্বিতীয় দৃশ্য : সময় ১৭৫৭ সাল ২ জুলাই স্থান জাফরাগঞ্জেরকো একখানা।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ

ক্লেটন- যুদ্ধে জয়লাভ অথবা মৃত্যুবরণ এই আমাদের প্রতিজ্ঞা।

ক্লেটন- কাপুরুষ বাঙ্গালির কাছে যুদ্ধ বন্ধ হবে না।

উমিচাঁদ- ব্রিটিশ সিংহ বয়ে লেজ গুটিয়ে নিলেন এত বড় লজ্জার কথা।

ওয়াটস - রাজনীতি আমরা কেন করব।

হলওয়েল - ফরাসি ডাকাতদের হাত থেকে আমরা আত্মরক্ষা করতে চাই।

মার্টিন - বিশেষ করে আপনার হঠকারিতার জন্য আজ আমাদের এই দুর্ভোগ।

হলওয়েল - সিরাজউদ্দৌলা মসকিউট বিগ্রেড মবিলাউজ করে দিয়েছেন নাকি।

হলওয়েল - হাজার হাতে হাজার হাজার হাত থেকে নিয়ে দশ হাত বোঝাই করতে আর কতটুকু সময় লাগে?

ঘসেটি - সিরাজের পতন কে না চায়?

উমিচাঁদ - দওলত আমার কাছে ভগবানের দাদা মশাই এর চেয়েও বড়।

ঘসেটি - তোমার ক্ষমতা ধ্বংস হবে সিরাজ।

জগতশেঠ - নবাবের কাছে আমাদের পদমর্যাদার কোন মূল্যই নেই।

মীরজাফর - দেশের স্বার্থের জন্য নিজেদের স্বার্থ তুচ্ছ করে আমরা নবাবের আজ্ঞা বহন হয়েই থাকবো।

সিরাজ - আমার সারা অস্তিত্ব জুড়ে কেবল যেন দেওয়ালের ভিড়।

সিরাজ - মৃত্যু বিধান করাটাই শাসকের চাইতে যোগ্যতার পরিচয় কিনা সেই বিষয়ে আমি নিঃসন্দেহ নই।

লুৎফা - বাংলার নবাব যখন পরের সাহায্যের আশায় লালাই তো তখন আমার কিসের অহংকার।

রাজবল্লভ - কর্নেল ক্লাইভ বিদেশের নবাব সিংহাসনের হাতল ধরে দাঁড়িয়ে থাকবেন নাকি?

ক্লাইভ - ইনি কি নবাব না ফকির?

ক্লাইভ - শাসন চালাতে হলে মনে দুর্বলতা রাখলে চলবে না।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব

সিরাজউদ্দৌলা নাটকে ১৭৫৬ সাল থেকে ১৭৫৭ সালে ঘটে যাওয়া কিছু বিশেষ ঘটনা উল্লেখিত আছে। ১৯শে জুন ১৭৫৬ সালে নবাব সৈন্যরা ইংরেজদের দুর্গ আক্রমণ করেন। এখন দুর্গের ভিতর ইংরেজদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে। কিন্তু ইংরেজদের যুদ্ধ না করে উপায় নেই। ইংরেজ শূণ্যদের মনে তখন কোন উৎসাহ নেই যুদ্ধ নিয়ে। তারা ভয় ভীত হয়ে পড়ে।

Read more : নবম ও দশম শ্রেণি : রসায়ন একাদশ অধ্যায় : খনিজ সম্পদ জীবাশ্ম সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর 

তখন ইংরেজদের ক্যাপ্টেন ক্লেটন কিছু গোলন্দাজদের নিয়ে কামান চালানো শুরু করে তাতে ইংরেজশুন্যরা যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত হয়ে যুদ্ধ করতে থাকে। ঠিক সে সময় নবাব সন্যরা দুর্গের কাছাকাছি আসা শুরু করে। 

ওয়ালেখান যুদ্ধ বন্ধের জন্য নির্দেশ দেয় তখন ইংরেজদের ক্যাপ্টেন ক্লেটন বলে ওঠে চুপ বেইমান। কাপুরুষ বাঙ্গালীদের কথায় তিনি যুদ্ধ বন্ধ করবেন না। তখন বাঙালির পক্ষের ওয়ালি খান তার প্রতি উত্তরে বলেন বাঙালি কোন কাপুরুষ নয়। 

ইংরেজরা যদি যুদ্ধ বন্দ না করে তাহলে বাঙালিরা তার প্রমাণ দিবে। ঠিক সে সময় হলওয়েল নবাবের কাছে উপস্থিত হন এবং আত্মসমর্পণের যৌক্তিকতা বর্ণনা করেন। তখন মনে করেন তার গভর্নর রজার ডেকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। 

যুদ্ধ জয়ী নবাব তখন হলওয়েলের কাছে ওইফিও চাইলেন। বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে বাংলার এর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরার বড় সাহস ইংরেজরা কোথা থেকে পেল। নবাব ওয়াটসকে অতিষ্ঠ ও অত্যাচারের জন্য তার কাছে জবাব চাইলেন। 

তখন নবাব নির্দেশ দিলেন যে প্রত্যেক ইংরেজদের সম্পত্তি যেন বাজেয়াপ্ত করে নবাবের দরবারে রাখা হয়। তখন কলকাতা থেকে বিতাড়িত হই ইংরেজরা ভাগীরথী নদীর তীরে ভাসমান ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে আশ্রয় নেয়। যাই হোক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রভাব দ্বারা সিরাজুদুল্লাহ উচ্চ আকাঙ্ক্ষা শীঘ্রই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে, যার অর্থনৈতিক কারণে অর্থনৈতিক স্বার্থে তার নিজের সাথে সংঘর্ষ করতে লিপ্ত হয়। 

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলা নিজের পদমর্যাদার মাধ্যমে রবার্ট ক্লাইভ এর নেতৃত্বে ব্রিটিশ বাহিনীর হাতে নিপীড়িত হয় এবং পরাজিত হয়।

নবাব সিরাজদৌলার নাটকের মূলভাব এর দুঃখজনক কাহিনী

পলাশীর যুদ্ধ নবাব সিরাজউদ্দৌলার জন্য একটি দুঃখজনক ঘটনা বহন করে আনে। কারণ তিনি তার নিজের লোকেদের কাছে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য ইংরেজদের হাতে বন্দি হয়।

Read more: অধ্যবসায় রচনা

১৭৫৭ সালে তার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। যা একটি যুগের শেষ এবং বাংলার ব্রিটিশদের আধিপত্য বিস্তার করে। ওই বিশ্বাসঘাতকতার কারণে সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু তখন থেকে সাহিত্যের, নাট্যমঞ্চে অনেক খ্যাতি লাভ করে।

সিরাজউদ্দৌলার নাটকের মূলভাব এর উত্তরাধিকার অব্যাহত

বহু শতাব্দী বছর পেরিয়ে গেল এখনো সিরাজউদ্দৌলার উত্তরাধিকার টিকে আছে। ক্ষমতা, ন্যায় বিচার ইস্যুতে সমসাময়িক দর্শকদের সাথে পরিচিত।

Read more: নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ১০ম অধ্যায় (সমন্বয়)

তার এই গল্পটি মাণবিক মূল্যায়ন এবং স্বাধীনতার জন্য একটি স্থায়ী অনুসন্ধানের মর্মান্তিক অনুসরণ হিসেবে কাজ করে।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব এর উপসংহার

ইতিহাস এবং বাংলা থিয়েটার রাজ্যে সিরাজউদ্দৌলা চরিত্রটি একটি মর্মান্তিক ব্যক্তিত্ব চরিত্র এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার একটি প্রতীক হিসেবে একক স্থান দখল করে আছেন।

তার ক্ষমতার শেষ থেকে তার অকাল মৃত্যু তার জীবনকে ব্যাখ্যা করে গেছে। প্রত্যেকের জীবনে জটিলতা এবং তিনি যে একটি অস্থির যুগে বসবাস করেছেন তিনি তার মৃত্যুর দ্বারা তা ব্যাখ্যা দিয়ে গেছেন।

Read more : HSC Question Bank 2024 English 2nd Paper: Special Uses of Words & Phrases

তিনি তার নাটকের স্থায়ী শক্তিশালী প্রমাণ। যিনি তার নিজের লোকের দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা কাছে হার মানে এবং অকাল মৃত্যুবরণ করেন।

Previous Post Next Post